যে পাঁচটি লক্ষন দেখে বুঝবেন আপনার গাড়ির ইঞ্জিন ভাল নেই :

একটি গাড়ি চলতে সবথেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হলো ইঞ্জিন। আর ইঞ্জিনে কোন গুরুতর সমস্যা থাকলে আপনি আগে থেকেই খেয়াল করতে পারবেন। আগে থেকেই জানুন খারাপ ইঞ্জিন ও এর সমস্যা । সমস্যা অল্প থাকতেই সেরে ফেলুন, তা নাহলে ঘটতে পারে সমূহ বিপদ । আজকে আমরা সে বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করব যে, ঠিক কোন ৫ টি বিষয় দেখে আপনি নিশ্চিত হবেন যে, আপনার গাড়ির ইঞ্জিন ভাল নেই।
👉 ধোঁয়াঃ
গাড়ি থেকে যখন ধোঁয়া বের হয় তখন কখনোই সেটা কোন ভালো লক্ষন হিসেবে ধরা হয় না। অনেক সময় লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন গাড়ির পেছন দিক থেকে এক্সহোস্ট পাইপ দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে । এসব ধোয়ার আবার নির্দিষ্ট রং থাকে । ধোয়ার রং দেখে আপনি বুঝতে পারবেন ঠিক কোন সমস্যা আপনার ইঞ্জিনের হচ্ছে ।
👉 নীল রংয়ের ধোঁয়াঃ
নীল রংয়ের ধোঁয়া বের হওয়ার অর্থ হচ্ছে ইঞ্জিনের ভেতর থেকে তেল অন্য কোন ভাবে বের হচ্ছে এবং জ্বালানির সাথে পুড়ছে। আর এই জ্বালানি পোড়ার ব্যপার বন্ধ করতে সব সময় আপনার ক্র্যান কেসে ইঞ্জিন অয়েল দিয়ে রাখতে হবে। তবে সবথেকে বেশী ভালো হয় যদি আপনি আপনার গাড়িটি কোন মেকানিকের কাছে নিয়ে যান আর গাড়ির নির্দিষ্ট লিকেজ সারিয়ে তোলেন।
👉 সাদা রংয়ের ধোঁয়াঃ
পানি ঘনীভূত বা জমাট বেঁধে ফুয়েলের সরবরাহের স্থানে সাথে মিশে যায়। কার কুলিং সিস্টেমে অ্যান্টি ফ্রিজ জাতীয় পদার্থ যোগ করলে পানি বা অন্য কোন তরল ঢালার আগ পর্যন্ত গাড়িকে গরম হওয়া থেকে রক্ষা করবে । কিন্তু তবুও সবথেকে ভাল বুদ্ধি হলো কোন ভালো সার্ভিস সেন্টার থেকে সমস্যা গুলো সারিয়ে নেয়া। আর যদি গাড়ির হুডের নিচ থেকে ধোঁয়া বের হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার গাড়ির ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে গিয়েছে । আর আপনি গাড়ির টেলপাইপ থেকে বের হওয়া সাদা বর্ণের ধোঁয়া আগে লক্ষ্যই করেন নি। গাড়ি অতিরিক্ত গরম হলে, সাধারণত টেইল পাইপ থেকে আগে ধোঁয়া বের হয় পরে গাড়ির হুডের নিচ থেকে ধোঁয়া বের হয় । ইঞ্জিনের এমন অতিরিক্ত গরম হওয়ার আরেকটি মুখ্য কারণ হচ্ছে , ইঞ্জিনে একেবারেই কোন কুল্যান্ট জাতীয় তরল না ঢালা বা ঢালতে ভুলে যাওয়া।
👉 খারাপ ইঞ্জিন ও বিচ্ছিরি গন্ধঃ
গাড়ি ঠিকভাবে চালাতে চাইলে কীভাবে গাড়ির পার্টসগুলো যত্নে রাখতে হয় সেটা জানতে হবে । গাড়ির পার্টসগুলো বিশেষ ভাবে যত্নে রাখলে গাড়ির ভেতরে বাজে গন্ধ থাকেনা । কিন্তু খারাপ ইঞ্জিন ও এর গন্ধ পুরাই অন্যরকম। গাড়ির ভেতরে বসে কিছু খেলে বাজে গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে। সেটা এক জিনিস আর গাড়ির হুডের নিচে গ্যাসোলিন, পেট্রোল এবং অনেক ধরনের ধাতব পদার্থের গন্ধ সেটা অন্য জিনিস। এই ধরনের গন্ধ এক হতে পারে আপনার গাড়ির তেল অথবা কুল্যান্ট লিক করছে , আরেক হতে পারে এক্সহস্ট গ্যাস লিক হয়ে আপনার গাড়ির ইন্টেরিওরে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। গাড়ি এবং ট্রাকে অনেক ধরনের টক্সিক গ্যাস থাকে যেমন- কার্বন মনোক্সাইড । এসব গ্যাসও মারাত্মক দুরগন্ধের কারণ হতে পারে। আর আপনি যদি গাড়ি থেকে বের হয়েও এমন গন্ধ পেতে থাকেন তাহলে অবশ্যই গাড়ি দ্রুত সারানোর ব্যবস্থা করুন। হুডির নিচ থেকে অনেক সময় রাবার পোড়ার গন্ধ আসতে পারে । ড্রাইভ বেল্ট অথবা অন্যান্য পার্টসের বেল্ট যদি নষ্ট বা ছিঁড়ে যায় তখন এমন বাজে গন্ধ ছড়াতে পারে। রাবারের বেল্টের ভেতর যে তরল পদার্থ থাকে সেগুলো পুড়ে বা গরম হয়ে এমন গন্ধ হতে পারে।
👉 ঘড়ঘড় শব্দঃ
ছোটখাটো ক্লিক বা টিক শব্দ খুবই সাধারণ । কিন্তু যদি ইঞ্জিন মোটর স্টার্ট করার সাথে সাথে কোন অদ্ভুত শব্দ পান তাহলে নিশ্চই ব্যাপারটা যথেষ্ট বিরক্তিকর। আর এমন শব্দ নিয়ে গাড়ি চালাতে ভয়ও করার কথা। আর এমন শব্দ যদি আপনার গিয়ারের মধ্যবর্তী জায়গা থেকে সবসময় আসতে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার গাড়ির ট্রান্সমিশন পাল্টানো বা মেরামত করার প্রয়োজন। আর ব্যাপারটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আর যদি আপনি ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনে গাড়িটি চালান তাহলে তো দ্রুত পার্টস মেরামতের জন্য বিশেষজ্ঞের উপদেশ প্রয়োজন।
👉 অস্বাভাবিক নড়াচড়াঃ
গাড়িতে কোন রকম অস্বাভাবিক নড়াচড়া, হঠাৎ থেমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষ্য করলে সাথে সাথে বুঝে নেবেন গাড়িতে খারাপ ইঞ্জিন জনিত সমস্যা রয়েছে । গাড়ি যদি থেমে থেমে পপিং এন্ড রকিং (একটি ডান্স মুভের নাম) মুডে থাকে তাহলে তো ব্যাপক সমস্যা । এ ধরনের সমস্যা হয় মূলত নষ্ট স্পার্ক প্লাগ , জ্বালানি পাইপে ময়লা অথবা গাড়ির প্রধান নিয়ন্ত্রণ পার্টসে কোন সমস্যা ইত্যাদি কারনে। আর এসব সমস্যায় সবশেষে আপনি যা করতে পারেন সেটা হলো গাড়ির এক্সেলেটরে চাপ দিয়ে গাড়িকে একটু সময় দিন যাতে গাড়ি নিজে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে। আর যদি অনেক প্রেশার দিয়ে গাড়ির এক্সেলেটর প্রয়োগ করার পরও গতি না বাড়ে তাহলে অবশ্যই কোন অভিজ্ঞ মেকানিকের শরনাপন্ন হোন।
👉 ওয়ার্নিং লাইট / লাল বাতিঃ
গাড়ি চালানো শেখার সময় আপনাকে গাড়ির লাইট নিয়ে মোটামোটি একটি পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করে নিতে হবে। গাড়ির কোন লাইট কি কাজে জ্বলে সেগুলো খুব ভালোভাবে জেনে নেবেন আর সবসময় লক্ষ্য রাখবেন গাড়ি থেকে নামার সময় কোন লাইট জ্বলে রয়েছে কিনা। গাড়ির স্টার্ট নেওয়ার সময় যদি অনেকবার লাইটগুলো জ্বলে আবার নিভে তাহলে বুঝে নিতে হবে গাড়ির কম্পিউটার চেক করে নিচ্ছে কোথাও কোন সমস্যা রয়েছে কিনা। একে একে যখন সব লাইট বন্ধ হয়ে যাবে তখন বুঝবেন এবার আপনার গাড়িটি সঠিকভাবে চলার জন্য তৈরি । আর যদি সবশেষে কোন একটা লাইট জ্বলে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার গাড়িতে খারাপ ইঞ্জিন সম্পর্কিত সমস্যা রয়েছে। এখন সমস্যা বড় না ছোট সেটা নির্ভর করে কোন লাইটটি জ্বলে রয়েছে তার উপর। লাইটগুলো সাধারণত সেন্সরের সাথে সংযুক্ত থাকে । সেন্সর হচ্ছে গাড়ির ব্রেইনের মত কাজ করে। কোন কারনে গাড়ির ইঞ্জিনে বা অন্য কোথাও সমস্যা থাকলে গাড়ির কম্পিউটার সেন্সরের মাধ্যমে লাইট জ্বালিয়ে আপনাকে সতর্ক বার্তা পাঠাবে।
👉 সাধারণত তিনটি সমস্যায় লাইটগুলো জ্বলবেঃ
তেলের পরিমান কমে গেলে
তেলের প্রেশার কম থাকলে
চেক ইঞ্জিন লাইট
লাইট বিভিন্ন অর্থ বোঝাতে পারে । আপনি যদি গ্যাস ক্যাপের স্ক্রু শক্ত করে সংযুক্ত না করেন, তাহলে জ্বলে থাকতে পারে চেক ইঞ্জিন লাইট। এখন এরকম কোন সমস্যা চেক করতে আপনি স্ক্যানার টুল ব্যবহার করতে পারেন । স্ক্যানার টুল দেখতে অনেকটা ক্যালকুলেটরের মত। স্ক্যানার টুল আপনি আপনার গাড়ির সংযোগ পোর্টে সংযুক্ত করে নেবেন। আর সংযুক্ত করার পর গাড়ির প্রধান নিয়ন্ত্রক পার্টসের মাধ্যমে এই স্ক্যানার টুল আপনাকে জানিয়ে দেবে ঠিক কি সমস্যার কারনে আপনার গাড়ির ওয়ার্নিং লাইট বা লালবাতি জ্বলে রয়েছে।